ঢাকা ৩১ জানুয়ারি ২০২৫, ১৭ মাঘ ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

সাত কলেজ শিক্ষার্থীদের কর্মসূচি প্রত্যাহার 

সাত কলেজ শিক্ষার্থীদের কর্মসূচি প্রত্যাহার 

সব দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাসের পর আন্দোলন কর্মসূচি প্রত্যাহার করেছে সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা। মঙ্গলবার সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর সঙ্গে বৈঠক শেষে শিক্ষার্থীরা এ ঘোষণা দেন।

বৈঠকে সাত কলেজের প্রতিনিধি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা কলেজের দুইজন ও ইডেন মহিলা কলেজের একজন শিক্ষার্থী।

বৈঠকের বিস্তারিত তুলে ধরে ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী মঈনুল ইসলাম বলেন, ‘ছয় দফা দাবির একটি মেনে নেওয়া হয়েছে। বাকি ৫ দাবি মেনে নেওয়ার আল্টিমেটাম ছিল। দাবিগুলো মেনে নেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। বিভিন্ন প্রক্রিয়া পর্যালোচনা করে ধীরে ধীরে মানা হবে।’

মঈনুল ইসলাম বলেন, ‘উপ-উপাচার্য মামুন স্যার সাত কলেজের আর কোনো কার্যক্রমে জড়িত থাকবেন না। পদত্যাগের বিষয় ঢাবি উপাচার্যের সাথে বসে আলোচনা হবে। শিক্ষার্থীদের মারধর ও কটূক্তির বিষয়েও আলোচনা হবে। তিনদিনের মধ্যে ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী রাকিবের ওপর হামলার তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সবার প্রবেশের জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছে বলে জানানো হয়েছে।’

ঢাবি প্রো-ভিসি ও নিউমার্কেটের ওসিকে সরাতে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটামঢাবি প্রো-ভিসি ও নিউমার্কেটের ওসিকে সরাতে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম ঢাকা কলেজের এই শিক্ষার্থী বলেন, ‘স্বরাষ্ট্র ও তথ্য উপদেষ্টার সাথে বৈঠকে দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাসের প্রেক্ষিতে সাত কলেজের কর্মসূচি প্রত্যাহার করা হলো। পুরো বিষয়ের জন্য উপ-উপাচার্যকে দায়ী মনে করি।’

এ সময় ইডেন মহিলা কলেজের শিক্ষার্থী সাদিয়া আফরিন মৌ বলেন, ‘সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা নতুন বিশ্ববিদ্যালয় পাচ্ছে। সব দাবি মেনে নেওয়া হবে বলে আশাবাদী।’

রোববার পাঁচ দফা দাবি নিয়ে কথা বলতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. মামুন আহমেদের সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে দুর্ব্যবহারের শিকার হওয়ার অভিযোগ করেন অধিভুক্ত সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা।

আন্দোলনকারীরা জানান, ভর্তি পরীক্ষায় অযৌক্তিক কোটা পদ্ধতি বাতিলসহ পাঁচ দাবির অগ্রগতি জানতে তাঁরা অধ্যাপক মামুনের সঙ্গে দেখা করতে যান। এ সময় অধ্যাপক মামুন ছাত্রদের অপমান-অপদস্থ করে বের করে দেন। এর পর সেখান থেকে বের হয়েই এর প্রতিবাদে শাহবাগ, সায়েন্সল্যাব ও টেকনিক্যাল মোড়ে সড়ক অবরোধ করেন তাঁরা।

এর প্রায় সাড়ে চার পর রাত সাড়ে ১০টার দিকে মিছিল নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্দেশে রওনা হন তাঁরা। এসব শিক্ষার্থী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ–উপাচার্য অধ্যাপক মামুন আহমেদের বাসভবন ঘেরাও করতে যাচ্ছিলেন।

সরকারকে না জানিয়েই ৭ কলেজের অধিভুক্তি বাতিল করেছে ঢাবি: শিক্ষা উপদেষ্টাসরকারকে না জানিয়েই ৭ কলেজের অধিভুক্তি বাতিল করেছে ঢাবি: শিক্ষা উপদেষ্টা প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা নীলক্ষেত মোড়ে পৌঁছালে ধাওয়া দিয়ে এক পর্যায়ে সরিয়ে দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। দুই পক্ষ মুখোমুখি অবস্থান নেয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সাউন্ড গ্রেনেড ছুড়তে হয়েছে পুলিশকে। চার প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয় ওই এলাকায়। আহত হন বেশ কয়েকজন।

গভীর রাত পর্যন্ত চলে ধাওয়া–পাল্টা ধাওয়া। রোববার দিবাগত রাত ৩টার দিকে নীলক্ষেত মোড়ে সংবাদ সম্মেলনে সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা আজ সোমবার নিজ নিজ কলেজের সামনে অনির্দিষ্টকালের জন্য ‘ব্লকেড’ কর্মসূচি দেন।

এ পরিস্থিতিতে সোমবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খান ৭ কলেজের অধ্যক্ষদের সঙ্গে একটি জরুরি সভায় করেন। সভা শেষে উপাচার্য জানান, অধিভুক্ত সরকারি ৭ কলেজের স্নাতক প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষা আর এই বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে হবে না। চলতি ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষ থেকেই এ সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে।

কিন্তু উপ–উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে অনড় থাকেন সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা। তাকে পদত্যাগে ২৪ ঘণ্টার সময় বেঁধে দেওয়া হয়।

এদিকে মঙ্গলবার দুপুরে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ে এক অনুষ্ঠানে শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ জানান, সরকারকে কোনো কিছু না জানিয়েই সাত কলেজের অধিভুক্তি বাতিল করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। তিনি বলেন, ‘সাত কলেজ নিয়ে নতুন একটি স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয় করা হবে। অন্তর্বর্তী সরকার সাত কলেজকে নিয়ে একটি আলাদা বিশ্ববিদ্যালয় কিংবা বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো কাঠামো তৈরির মডেল নিয়ে কাজ করছিল। কারণ এই সংকট দীর্ঘদিনের। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, সেখানে শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের ভূমিকা খুবই দুঃখজনক।’

শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বৈঠক শেষে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, ‘সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের দাবি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে সব মেনে নেওয়া হবে।’

সাত কলেজ,কর্মসূচি,প্রত্যাহার
আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত